Latest Textile | Rudro Dutta
➡️বাংলাদেশের বস্ত্র ও পোশাক শিল্প আমাদের অর্থনৈতিকভাবে নানা প্রকার সাহায্য করছে বিগত বছর গুলো থেকে। গার্মেন্টসগুলো এদেশের আয়ের অন্যতম উৎস। ২০০২ সালে বাংলাদেশ বিদেশে বস্ত্র ও পোশাক রপ্তানি করে ৭৭% পন্যদ্রব্য। এই দেশের অর্থ শক্তির মুল উপাদান বা হাতিয়ার হলো বস্ত্র ও পোশাক শিল্প। ২০১৩ সালে আমাদের দেশের নারী শ্রমিকদের অগ্রসরতার কারণে আমাদের মোট বৈদেশিক মুদ্রা দাড়ায় ১৯ বিলিয়ন ডলার। বিশ্বের সর্বাধিক রপ্তানি কৃত দেশ হিসেবে চীনের পর বাংলাদেশের স্থান। বাংলাদেশের বস্ত্র পন্যের ৬০% ক্রেতা হলো ইউরোপিয়ান দেশ আর বাকি ৪০% ক্রেতা আমেরিকান দেশ গুলো। মালিকানার কথা বলতে গেলে এই দেশের ৫% গার্মেন্টস এবং অন্যান্য বস্ত্র শিল্পের মালিক হলো বিদেশিরা। বেশির ভাগ মালিকই নিজ দেশের।ইতিহাসের পাতায় বাংলাদেশের গার্মেন্টস শিল্প যেমন সর্নাক্ষরে লিখা আছে তেমনি বিপরীতভাবে অনেক দুর্ঘটনার সাক্ষিও আছে এই গার্মেন্টস বা বস্ত্র শিল্প। অনেক সময় বিল্ডার্সদের অমন্স্ক্তা কিংবা হেয়ালির কারণে হানি ঘটে অনেক গার্মেন্টস শ্রমিকদের, রানা প্লাজা তারই এক জলন্ত উদাহরণ। সেই পরিলক্ষিতে বর্তমানে সকল শিল্প কারখানায় বিপুল নিরাপত্তা প্রধান করা শুরু হয়েছে।বর্তমানে বাংলাদেশের নারিদের এই শিল্পে বেশি অগ্রাধিকার দেয়া হচ্ছে। তাছাডা এখন শ্রমিকদের অনেক সুবিধা প্রধান করা হ্য়।মুলত এই কারণেই দেশের শিল্প আগের থেকে বহুলাংশে এগিয়ে গেছে।
➡️বস্ত্র শিল্পের ইতিহাস সম্পাদনা:
১৯৪৭ থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত সময় কালে পুর্ব পাকিস্তানের অনেক বস্ত্র কারখানা পশ্চিম পাকিস্তানের আয়ত্তে ছিলো।
▶️বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প (Bangladesh And Textile):
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্প যাত্রা শুরু করে ষাটের দশকে। তবে সত্তরের দশকের শেষের দিকে রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে এই শিল্পের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। বর্তমানে এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানিমুখী শিল্পখাত।
পোশাক শিল্প তৈরি পোশাক বা আরএমজি (Readymade Garments) নামে সমধিক পরিচিত। সুবিন্যস্ত কারখানায় বৃহদায়তনে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে পোশাক উৎপাদনের ঘটনা বাংলাদেশে অপেক্ষাকৃত নতুন। ষাটের দশকের শুরু পর্যন্ত ব্যক্তি উদ্যোগে ক্রেতাদের সরবরাহকৃত এবং তাদেরই নির্দেশিত নকশা অনুযায়ী স্থানীয় দর্জিরা পোশাক তৈরি করতো। শুধুমাত্র শিশুদের জামাকাপড় এবং পুরুষদের পরিধানযোগ্য গেঞ্জি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে ষাটের দশক পর্যন্ত তৈরি পোশাক শিল্পের অভ্যন্তরীণ বাজার ছিল না বললেই চলে। সত্তরের দশকের শেষার্ধ থেকে মূলত একটি রপ্তানিমুখী খাত হিসেবে বাংলাদেশে তৈরি পোশাক শিল্পের উন্নয়ন ঘটতে থাকে। তৈরি পোশাক শিল্পের অভ্যন্তরীণ বাজারও দ্রুত সম্প্রসারিত হয় এবং এই খাতের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলের আয় বৃদ্ধি পায় ও জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। খাতটি কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে দ্রুত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে এবং তা বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন ও জিডিপিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখে।
১৯৮০ সাল পর্যন্ত কাঁচা পাট ও পাটজাত দ্রব্য মোট রপ্তানিতে ৫০% অবদান রেখে রপ্তানি আয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছিল। আশির দশকের শেষার্ধে পাট ও পাটজাত দ্রব্যের আয়কে অতিক্রম করে পোশাক শিল্প রফতানি আয়ে প্রথম স্থানে চলে আসে। ১৯৯৯ সালে এই শিল্পখাতে সরাসরি কর্মসংস্থান হয় ১.৪ মিলিয়নেরও বেশি লোকের, যার মধ্যে শতকরা প্রায় ৮০ জন মহিলা। তৈরি পোশাক শিল্পের সম্প্রসারণের সাথে সাথে বস্ত্র, সুতা, আনুষঙ্গিক উপকরণ, প্যাকেটজাতকরণের উপকরণ ইত্যাদি শিল্পেরও সম্প্রসারণ হতে থাকে। এতদ্ব্যতীত পরিবহন, ব্যাংকিং, শিপিং এবং ইন্সুরেন্স সেবার চাহিদাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। এর সবটাই অতিরিক্ত কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করে। এ ধরনের নতুন পরোক্ষ-কর্মসংস্থান মূলত তৈরি পোশাক শিল্প কর্তৃক সৃষ্টি যার সুবিধাভোগী মোট ২,০০,০০০ শ্রমজীবী।
বাংলাদেশ থেকে তৈরি পোশাকের (কেবলমাত্র ওভেন শার্ট) প্রথম চালানটি রপ্তানি হয় ১৯৭৮ সালে। এরপরেই বিদেশি ক্রেতাদের আগ্রহ বেড়ে যায় এবং এই শিল্প দ্রুত বেড়ে ওঠে। ১৯৮১-৮২ সালে মোট রপ্তানি আয়ে এই খাতের অবদান ছিল মাত্র ১.১%। ২০১০ সালের মার্চ মাসে তৈরি পোশাক শিল্পের অবদান দাঁড়িয়েছে মোট রপ্তানি আয়ের ৭৬%। সময়ের পরিক্রমায় তৈরি পোশাক আরও সম্প্রসারিত হয়ে ওভেন এবং নিটিং উপখাতে বিভক্ত হয়। ২০০২ সালে পোশাক রপ্তানিতে ওভেন ও নিটিং-এর অবদান ছিল যথাক্রমে ৫২.০৬% এবং ৮.৫৮%। পরবর্তীকালে নিট পোশাক উপখাত ওভেন উপখাতের তুলনায় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে নিট উপখাত ওভেন উপখাতকে অতিক্রম করে সমগ্র রপ্তানিতে ৪১.৩৮% (৬৪২৯ মিলিয়ন ডলার) অবদান রাখে, বিপরীতে ওভেন পোশাক ৩৮.০২% (৫৯১৮.৫১ মিলিয়ন ডলার) নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে নেমে আসে। ২০০৮-০৯ অর্থ বছরে নিট ও ওভেন একত্রে আমদানিকৃত কাঁচামালের মূল্যসহ সাড়ে ১২ বিলিয়ন ডলারে উপনীত হয় এবং সাড়ে ২২ লাখ মহিলা শ্রমিকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে।
তৈরি পোশাক শিল্পের সম্প্রসারণ বাংলাদেশের সমাজে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন সাধন করেছে।
সুত্র: গুগল, উইকিপিডিয়া।
লেখক:
রুদ্র দত্ত
Campus Ambassador - Latest Textile
এ্যাপারেল ইন্জিনিয়ারিং
ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়া টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, রংপুর।
0 মন্তব্যসমূহ