Latest Textile | Yeasir Arafat
আজকের দিনে পৃথিবীর যে কোন দেশের আর্মি বা স্পেশাল ফোর্স এর জন্য বুলেট প্রুফ জ্যাকেট একটি গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্র, যা ছাড়া যে কোন অপারেশন এর কথা ভাবাই যায় না। এটি একজন সৈনিক এর জীবন বাঁচিয়ে থাকে।
আপনি চিন্তা করুন একটা ফুটবল নেট, যখন ফুটবলটা নেটে যাচ্ছে কোন না কোন ভাবে কিন্তু ফুলবলকে নেট টা আটকে দিচ্ছে। কারণ খেয়াল করুন ফুটবলের তুলনায় নেটের ছিদ্র গুলো অনেক ছোট,ফুটবলটা নেট টিকে একটু পিষিয়ে দিচ্ছে ঠিকই কিন্তু বলকে আটকে দিচ্ছে এই কনসেপ্ট এর ভিত্তি করেই এই জ্যাকেটটি বানানো হয়েছে।
কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি এই বুলেট প্রুফ জ্যাকেট কিভাবে তৈরী করা হয়?
এর মধ্যে কি এমন পদার্থ থাকে যা এতো বেগে আসা গুলিকে থামিয়ে দিতে সক্ষম?
▶️মেটারিয়ালস ইউসেজ?
এর জন্য ফাইবার বা ফিলামেন্ট এর উৎপাদন করা হয়ে থাকে,যা ওজনে অনেক হালকা কিন্তু অনেক মজবুত হয়ে থাকে। এটি তৈরীর জন্য ক্যাভলার (DUPONT'S KEVLAR FIBRE) নামক ফাইবার ব্যাবহার করা হয়। এই কাজের জন্য সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ফাইবার হলো এটি। ক্যাভলার একটি প্যারা এরামিড সিন্থেটিক ফাইবার। এটি স্টিলের থেকেও অনেক হালকা হয়ে থাকে কিন্তু এটি এর ওজনের চেয়ে প্রায় ৫/১০ গুন বেশি স্টিলের সমান ক্ষমতা রাখে।
বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এর জন্য আরও একটি অল্টারনেটিভ ফাইবার ব্যবহার করা হয় সেটি হলো ভেকট্রান (VECTRAN),যা ক্যালভার ফাইবার থেকেও বেশি শক্তিশালী।
আরও একটি ফাইবার ব্যবহার করা হয় সেটি হলো ডায়নিলা (Dyneema)। এটি একটি পলিথিন বেজড ফাইবার যা হাল্কা হওয়ার পাশাপাশি অনেক মজবুত হয়ে থাকে
▶️ কিভবে তৈরী করা হয় একটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট?
এই জ্যাকেট এর দুইটি লেয়ার থাকে। উপরের লেয়ার টাকে বলা হয় সেরামিক লেয়ার এবং পেছনের বা ভিতরের লেয়ারটিকে বলক হয় বেলাস্টিক লেয়ার।
এবার এই দুটি লেয়ার আলাদা ভাবে তৈরী করা হয়। যেখানে এর আসল পার্টস গুলো ভালোভাবে আলাদা করে সেলাই করে দেওয়া হয় এবং শেষে এসেম্বেলি লাইনে এসে পুরো জ্যাকেটিকে সেলাই করে বানানো হয়।
জ্যাকেট বানানোর প্রক্রিয়ায় ফাইবার বা ফিলামেন্ট কে বড় রিলে পরিণত করা হয়। এরপর এই রিলকে ডাইনিমা বা ভেকট্রান এর সহায়তায় একটি মজবুত চাদর বা বেলাস্টিক লেয়ারে রুপ দেওয়া হয় (এটি ই সেই লেয়ার সেটি গুলি লাগার সাথে সাথে গুলির পুরো শক্তিকে পুরো ছড়িয়ে দেয়)। এই লেয়ার এর উপর প্রায় ১৩০-২০০ মিটার রোল করা হয়ে থাকে।
কিভাবে কাজ করে এই জ্যাকেট?
▶️ বুলেট প্রুফ জ্যাকেট এর সব থেকে ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো কিভাবে এটি কাজ করে থাকে।
যখন একটি গুলি কোন আর্মি বা কপের শরীরে লাগে তখন সবার আগে গুলিটি প্রথম লেয়ার আমরা যেটাকে সেরামিক লেয়ার বলে থাকি সেই লেয়ারে বাধাঁ পায়। ধাক্কা খাওয়া মাত্রই গুলির সূঁচালো মুখটি ভেংগে যায় এবং গুলিটি ভেদ করে যেতে পারে না।তার পরের কাজটি হলো বেলাস্টিক লেয়ারের,গুলিটি জ্যাকেটে লাগা মাত্রই প্রবল বল এই লেয়ারটি শোষণ করে নেয়,যার ফলে গুলিটি আর শরীর পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না।
আগেকার বুলেট প্রুফ জ্যাকেট গুলো অনেক অনেক ওজনের হতো প্রায় ১০-১৫ কেজি, যেটি গায়ে দিয়ে যে কোন অপারেশন এ চলাফেরায় অনেক কষ্ট হতো। ২০১৯ এর শুরুর দিকে ভারতের একটি সংস্থা ভাবা কাবজ নামে একটি লাইট ওয়াট বুলেট প্রুফ জ্যাকেট বাজারে ছাড়ে।
বর্তমানে একটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেটের ওজন প্রায় ৮ কেজি! ভারতীয় রুপিতে একটি ভেকট্রান জ্যাকেট এর দাম পড়ে ৪০ হাজার রুপি থেকে ২ লাখ রুপি পর্যন্ত ।
Writer:
Yeasir Arafat
DWMTEC - AE
Committee Manager - Latest Textile
0 মন্তব্যসমূহ