PCIU + আমরা =❓ (Memories)

PCIU


Port City International University এর প্রতি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ, এই লকডাউনে মিস করা মূহূর্তগুলো তুলে ধরতে এই আয়োজন। ক্যাম্পাসের আবহ, বন্ধুদের সাথে আড্ডা, প্রতিটা মুহূর্তকে যে আমরা আবার ফিরে পেতে চায় তারই এক ছোট্ট প্রতিফলন।

_________________

◾ স্মৃতিচারণ সবসময় সুখের হয় না। আবার কিছু স্মৃতি এমনও হয় যা কষ্টের মাঝেও আন্দনের এক নির্মল ছোঁয়া দিয়ে যায়। আমার ২ বছরের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের টুকরো টুকরো স্মৃতিগুলো এমনই। ক্যাম্পাসে বড় কোনো খোলা মাঠ, বা আহামরি কোনো প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত স্থান না থাকলেও প্রতিদিনের কর্মচঞ্চল দিনগুলো খুব মিস করি। সাথে ক্লাসের আড্ডা, পড়ার মাঝেও স্যারদের সাথে হাসি-ঠাট্টা, টঙে বা ক্যান্টিনে সিঙ্গারা নিয়ে বন্ধুদের সাথে কাড়াকাড়ি, বাসের ভাড়া আগে দেওয়ার জন্য যুদ্ধ বা না দিয়ে বন্ধুকে ফাঁসানো, ক্লাস শেষে কে আগে বের হবে, তাড়াহুড়ো করে ডেডলাইনে লাইব্রেরীতে সবাই বসে এসাইনমেন্ট লেখা বা আইডি আনতে কেউ ভুলে গেলে তাকে ফন্দিফিকির করে ঢুকানো এসব কিছুই মিস করি। হয়ত একটু দেড়িতে, কিন্তু সেই দিনগুলোর মাঝে আবার হারিয়ে যাওয়ার আশা রাখি। ২টা বছর যে এখনও বাকি। আকাশে কালো মেঘের ক্ষণটা হয়ত একটু বেশি এখন, তবে কালো মেঘ সবসময় থাকে না, দিনশেষে ঠিকই সূর্য উঁকি দেয়, সেই অপেক্ষায়-ই থাকলাম।

☞ Sayem Siddique (Batch- BTE 15B)
➤Committee Manager.

_________________

◾ হলিক্রিসেন্ট হাসপাতালের পাশ থেকে ৫-৭ মিনিটের হাটা পথ পার করেই আমাদের স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়। ক্যাম্পাসের সামনে দাঁড়ানো ৭/৮ টা বাইক আর তাকে ঘিরে অনেক ছেলেমেয়েদের জটলা করে আড্ডা হাসাহাসি আর গল্পের বাহার। আছে আলী ভাইয়ের দোকানের আড্ডা, হাসানের দোকানের আড্ডা, আছে আদিয়ান স্টোরে ক্লাস শুরুর ৩/৪ মিনিট আগে বা পরে শীট, কভার পেইজ, ফাইল কেনার হুড়াহুড়িতে মুখরিত কিছু সময়। 😊
গেটের দুইজন সিকিউরিটির সবসময় "আইডি কই? আইডি পরেন" কথার প্রতি আমাদের বিরক্তি আক্ষেপ- এসব মিলিয়েই ছিল। আর এই কোয়ারান্টাইনে এসবই বড্ড মিস করি।

এই ক্যাম্পাসে নিয়ম কানুন মেনেই সব করা হয়।আর এসব নিয়মই পোর্ট সিটির এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। ক্যাম্পাসের বাগান তেমন একটা বড় নয়। বরং প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ছোটই। তবে এই বাগানে গড়ে উঠেছে হাজার-হাজার বন্ধুত্ব, প্রেম এবং অবিচ্ছেদ্য বন্ধন। আছে ব্যস্ত ক্যাফেটেরিয়া, অসমাপ্ত এসাইনমেন্ট, রিপোর্ট শেষের জন্য প্রায় শিক্ষার্থীর শেষ ভরসা এই ক্যাফেটেরিয়া।।।

আছে খাওয়া দাওয়াই মুখরিত ছেলেমেয়েদের হাসি আড্ডা আর ফুচকা খাওয়া। এই ফুচকার জন্য পোর্ট সিটির ক্যাফেটেরিয়ার বিখ্যাত বলা যায়। আর শীট কেনার জন্য ঠেলাঠেলির যুদ্ধ হয় সেখানে 😂। ছোট্ট লবিটাও সাক্ষী হয়ে আছে অনেক বন্ধুত্বের। A Building, B Building, C Building এর সামনে ছেলেমেয়ের ক্লাস শুরুর আগের দৌড়াদোড়ি তো আছেই। হঠাৎ করে এই কোয়ারান্টাইনে এসব সবকিছুই যে খুব মিস করছি। টেক্সটাইল ১৫-বি তে জমানো আড্ডাটাও খুব মিস করি। আশা করি কোভিডের পর এই ক্যাম্পাস আবার প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠবে। আবার ছাত্রছাত্রীদের আড্ডা-গানে মুখরিত হবে। C.T, রিপোর্ট, এসাইনমেন্ট,
মিড- ফাইনালের মাধ্যমে আবারো সবাই এক একটা ট্রাইমিস্টার শেষ করবে এই কামনা রইলো।

☞ WarIsha Khan (Batch- BTE 15B)

_________________

◾ ভার্সিটি জীবনের স্মৃতিচারণ সবারই একি জায়গায় থাকে "বন্ধু" আমার ক্ষেত্রেও তার বিপরীতে নয়। ভালো বন্ধু পাওয়াটা ভাগ্যের উপর ছেড়ে দিতে হয়, হীরার মতো মূল্যবান বন্ধু পাওয়াটা কি ভাগ্য নাকি আদো ভাগ্যের ঊর্ধ্বে তা আমার জানা নেই। প্রথম দিকে হয়ত বেপারটা বুঝতে পারি নি।এরপরের স্মৃতি গুলো আসর জমিয়ে গল্প করে শুনানোর মতো।
ভার্সিটি ক্লাস শেষ করে সময়ের পর সময় আড্ডা, আবার বাসায় গিয়ে কাজ শেষে সন্ধ্যায় বের হয়ে কাজির দেওরীর আড্ডা। কাজির দেওরীর আড্ডাটা ছিল অন্য রকমের, রাতের গভীরতার সাথে সাথে আড্ডার গভীরতা স্পষ্ট ছিল।

জীবনকে আবিষ্কার, জীবনকে উন্মোচন, সুখ দুঃখ ,একে অপরের প্রচন্ড করুণ সত্য গুলোকে শেয়ার আর গলা ছাড়িয়ে গানের সুর। কি ছিলনা সেই খানে! রাতের গভীরতা সাথে গানের সুরের ঢেউ যেন উষ্ণপিণ্ডের রক্ত সঞ্চালন তীব্র করে তুলতো। কাজির দেওরীর একটা নাম দেওয়া উচিত- 'দুঃখ নগরী' নাকি 'সুখ বিলাশ' দিব এই দ্বিধায় দেওয়া হয়নি এখনো। হুটহাট ট্যুরে যাওয়া আর এই-সেই তো লেগেই আছে। আরেকটা আবেগের জায়গা আছে ফাহিমের ব্যাচেলর মেস। অসংখ্য রাত জাগা গল্পের সাক্ষী। জীবনের বয়স হয়তো বেড়ে যাবে, কিন্তু মধু মাখা এই ক্ষন আজীবনের যৌবনা হয়ে রয়ে যাবে। হয়তো একটা সময় এসে ভার্সিটি জীবনের ইতি টানবো, ব্যস্ততার ছোবলে সেই জায়গা সেই ক্ষন হারিয়ে যাবে। আত্মার একটা অংশের মৃত্যু ঘটবে যে অংশ জীবন উপভোগ করতে শেখায়। ইস্পাত কঠিন শেকড় আটকে থাকা মূলের মতো বন্ধুত্ব বেঁচে থাকুক হৃদপিন্ডের রক্ত সঞ্চালনের শেষ অব্দি।

☞ Abdur Sobur Sajjad (Batch- BTE 16)

_________________

◾ স্বপ্ন যখন টেক্সটাইল, তখন সেখানে পাবলিকের পদার্থ বিজ্ঞান এর মতো সাবজেক্ট কে ফেলে এসে পোর্ট সিটিতে ভর্তি হওয়াটা মোটেও খারাপ সিদ্ধান্ত ছিলনা। সময়ের সাথে সবকিছু মিলিয়ে নেওয়ার মতোই প্রণের শহর চট্টগ্রাম এর ৩ টা বড় বড় বিল্ডিং এর সমন্বয়ে গড়া ক্যাম্পাস টাও আমাকে আপন করে নিয়েছে বরাবরের মতোই।
স্টুডেন্ট হিসেবে এভারেজ হলেও, ভার্সিটির কড়া নিয়ম কানুনের মাঝে এপর্যন্ত প্রায় ৩ বার আইডি কার্ড জব্দ করেছিল কতৃপক্ষ। ২ বার আমি অপরাধী ছিলাম, তবে একবার আইডি কার্ড প্রায় ৪৫ দিনের জন্য প্রক্টর অফিসে,কিন্তু সেবার অপরাধ ছিলনা আমার বা আমাদের... তাই রাগ করেই আইডি কার্ড অনেকদিন নিই নি। ভাগ্য পরিনতি এমন ছিল যে ক্রাইম যেটার জন্য তখন আইডি কার্ড হারিয়েছিলাম সেটার একমাত্র প্রমাণ দেওয়ার cc ক্যামেরা টাও অকেজো ছিল। ভার্সিটির প্রত্যেক টি ক্যামেরা সচল থাকে ২৪ ঘন্টা, তবে আমাদের ঐরুমেরটাই সেবার নষ্ট হয়েছিল😕...তবে আমাদের জন্য ডিপার্টমেন্ট শিক্ষক দের চেষ্টা গুলো ভুলার মতো না ❤।
তিনটে বিল্ডিং এর মাঝে কিছু ভালো মানুষের হাতে গড়ে উঠছি অল্প অল্প করে। এই গৃহবন্ধি জীবনে যতটা বন্ধুদের মিস করছি সেই পরিমানেই আমাদের শ্রদ্ধেয় শিক্ষক গনকেও মিস করছি..
ভালো থাকুক সবাই,দেখা হবে সুস্থ এক বাংলাদেশে। এটাই স্রষ্টার কাছে কামনা।

☞ Sheikh Feroz Ahmed Joy (Batch- BTE 15B)

_________________

◾ সবাই সবার স্মতিচারণে তুলে ধরেছে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য দৃশ্যগুলো। আমি একটু আমার প্রথম দিনের ভার্সিটি জীবন দিয়ে শুরু করতে চাই। অনেকেই বলে ভার্সিটি লাইফ নাকি মজার। আর সাথে কোন পেইন নেই। আর আমার তো নবীন বরণ-ই হয়েছে প্যারা খাওয়ার মাঝে। পাবলিক ভার্সিটির নবীন বরণ হয় র‍্যাগ দিয়ে আর আমার নবীন বরণ হলো ক্লাস করার মধ্য দিয়ে। যথারীতি নবীন বরণ এর প্রোগ্রাম শেষ হওয়ার সাথে সাথেও বলা হলো "এই যে আপনাদের রুটিন, ক্লাস আছে আপনাদের ৩০ মিনিট পরে এই কক্ষে"। গিয়েছিলাম ভার্সিটি দেখবো কি আছে একটু ঘুরে দেখবো। সেটা আর প্রথম দিন হলো নাহ। ক্লাস করে গোলাপ টা আর রুটিন টা হাতে নিয়ে বাসার দিকে রওনা হলাম প্রথম দিনে সম্পূর্ণ ভার্সিটি আর দেখা হয়ল না। এর পর থেকে শুরু হয় ভার্সিটির সৌন্দর্য উপভোগ করা। এই দুই দেড় বছর এমন ব্যস্ত ছিলাম সবকিছু নিয়ে, আর এখন ভার্সিটি যেতে না পেরে মিস করছি ক্যাম্পাসের দিনগুলো আর সাথে বন্ধুদের চেনা অচেনা মুখ গুলো। অপেক্ষায় আছি কখন এই ব্যস্ততায় আবার ছেয়ে যাব। বন্ধু মহলের সাথে কবে দেখা হবে আবার এক সাথে একি ক্লাসে! 😌😇

☞ Amir Hamza (Batch- BTE 18A)

_________________

◾ভার্সিটি নিয়ে সংক্ষিপ্ত স্মৃতিচারণ 😁

২০১৯ এর গ্রীষ্মের শুরুতে ভার্সিটিতে প্রথম পা পড়ে। দু'একজন পরিচিত মুখ পড়ে গেল ক্লাসে, স্কুলের বন্ধু তন্ময় আর কলেজের বন্ধু সাজ্জাদ, জাবেদ। পুরোনো মুখ গুলো ক্লাসে দেখে মনে ভালই তৃপ্তি পেয়েছিলাম😃।ধীরেধীরে অপরিচিত মুখ গুলোও পরিচিত হয়ে গেল।

আমাদের ভার্সিটিতে অন্যান্য ভার্সিটির মত বড় কোন খেলার মাঠ, অডিটরিয়াম,আড্ডা দেওয়ার জন্য বটবৃক্ষের ছায়া, বড় লাইব্রেরি, বড় ক্যাফেটেরিয়া না থাকলেও সাীমিত আকারে যা আছে তাতেই আমরা নিজেদের স্মৃতি তৈরি করি প্রতিদিন😌। ভার্সিটি কর্তৃপক্ষের নিয়মকানুন আর টিউশন ফি দেওয়ার প্যারা লেগে থাকত বিপরীতে পেতাম স্যার-ম্যাডামদের দের ভালবাসা।

ক্লাসের ফাকে বন্ধুরা মিলে আড্ডা, গান অথবা মাঠে ক্রিকেট নিয়ে ব্যাস্ত সময় যেত। গাড়িতে না উঠে, হেঁটে হেঁটে বাসায় যাওয়া অথবা ব্যাচেলর বন্ধুর ম্যাসে আড্ডার অনেক মুহূর্ত। হঠাৎ প্ল্যান করে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, খেলা দেখা বা কোন প্রোগ্রাম এ যাওয়া এসব মিস যেত না কখনো। পরীক্ষার আগের দিন লাইব্রেরিতে বসে পড়া নিয়ে সিরিয়াস হওয়া আর পরীক্ষার সময় বন্ধুদের জন্য সিট ধরা।

আশা করি সুদিন আবার ফিরে আসবে,আবার দেখা হবে প্রিয় ভার্সিটির সাথে❤

সব লিখতে গেলে বেলা ফুরিয়া যাবে তার আগেই বিদায় নিলাম, ভাল থাকবেন সবাই।

☞Abdullah Al Mamun (Batch BTE- 19)

_________________

◾১৯ এপ্রিল ২০১৮। আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিন। হাঁটি হাঁটি পা পা করে পেরিয়ে এসেছি দীর্ঘ দুই বছর। অথচ মনে হচ্ছে এইতো সেদিন ভর্তি হলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।
অপরিচিত ক্যাম্পাস, অপরিচিত সহপাঠী, অপরিচিত শিক্ষক, এ যেন এক নতুন জগত ছিল তখন। ধীরে ধীরে পরিচিত হলাম প্রত্যেক সহপাঠীর সাথে। প্রথম দিকে অনেক বন্ধুদের নিয়ে বড় একটা গ্রুপ ছিল। প্রায় পঁচিশ জন ছিলাম আমরা গ্রুপে। ধীরে ধীরে সংখ্যাটা কমে এল।

বলা হয়ে থাকে আনন্দের সময় নাকি তাড়াতাড়ি যায়। কথাটা বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সত্য। ক্লাস, অ্যাসাইনমেন্ট, টিউটোরিয়ালের প্যারা তো আছেই। সাথে আছে সকাল ৯টার ক্লাস এ দেড়ি করে যাওয়ার অভ্যাস😅। অনেকে বলেন, স্কুল লাইফটাই নাকি জীবনের শ্রেষ্ঠ সময়। বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইটা বছর কাটানোর পর এ কথা আমার কাছে অনেকটা ভুল মনে হয়েছে। আমার মতে, জীবনের শ্রেষ্ঠ সময় হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় অতিবাহিত করা জীবন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি জায়গা থেকে শেখার আছে অনেক কিছু। এ জীবনের পরতে পরতে অভিজ্ঞতার হাতছানি। অভিজ্ঞতাহীন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন যেন লবণবিহীন তরকারির মতো।।আমার কাছে জ্ঞানের চেয়ে অভিজ্ঞতার মূল্য বেশি। আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মানে শিক্ষার পূর্ণাঙ্গতা। আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মানে জীবনের পূর্ণাঙ্গতা।

☞AnTu Mallick ( Batch- 16)

______________________

Executive Committee of Ambassadors
Latest Textile
Port City International University.

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ