বাজ বাই সুপ্তকর | Bazz By Suptokor পর্ব ২ (১ম পরিচ্ছেদ)

Bazz By Suptokor

বাজ

Latest Human | সুপ্তকর

(বাজ পর্ব ২) (প্রথম প্রকাশ ১৬ই আগস্ট, ২০১৬)


বাজ পর্ব ১ এই লিংকে রয়েছে

 

১ম পরিচ্ছেদঃ

গাড়ি থেকে নামার পরই দিয়ার গাড়ি ছেরে দিল। ভাবছি প্যাকেটটা বাসায় ফিরে খুলে দেখব নাকি কোন হোটেলে বসে!

ঘড়িটা ১০টা বাজার ছোট্ট সংকেত দিল। বাসায় যেতে যেতে আবার দেরি হয়ে যেতে পারে, তাই আশেপাশে কোথাও নিরাপদ জায়গা দেখে কাজটা শেষ করতে হবে।

হোটেল না বলে চায়ের দোকান বলাই উত্তম, শুধু মাত্র রুটি ভাজা হয় বলে হোটেল। শুধু ভাল দিকটা এই যে এখানে ভিড় নাই। চা দেওয়ার কথা বলেই কোনার একটা টেবিল এ বসলাম। প্যাকেটটা খোলার আগে মনে পড়ল আবার কার জীবন যেতে চলেছে, আবার কার না কার পরিবার কাদঁবে! কিন্তু এগুলো ভেবে আমার কোন লাভ নাই, কারন আমিতো আর বাচাঁতে পারবো না।

চা দেওয়ার পর পকেট থেকে চুইংগাম বের করে মুখে দিলাম। চা খাওয়া আমার কোন ইচ্ছা নাই, শুধু শুধু তো আর দোকানে বসে থাকা যায় না।

প্যাকেট টা সম্পূর্ণ আঠা দিয়ে লাগানো। বাহির থেকে তেমন বোঝা যায় না যে প্যাকেটে কী আছে। খুলতেই একটি 4R size ছবি আমার চোখ ধাঁদিয়ে দিল। যেমন ফর্সা তেমননি মুখের গরন। খুব কম মানুষকেই এফ্রন পরলে মানায়, তার মধ্যে এই লোকটি একজন। ছবিটির পিছনে একটি কার্ড পিন দিয়ে লাগানো,

ডাঃ কামাল হোসেন

এম.বি.বি.এস(ডি.এম.সি), ডি.টি.সি.ডি

এফ.সি.সি.পি(আমেরিকা)................

দীর্ঘ স্বাস ছেরে প্যাকেটটা সম্পূর্ন  খুললাম। আর একটা বস্তু যা চির চেনা তা হল S.pen Drive আর ছোট্ট একটি কাগজ একটা টেলিফোন নম্বর। নম্বর দেখে বুঝলাম ওটা আমার ক্যাস।

ঠান্ডা চা টা এক চুমুকে শেষ করে হোটেল থেকে বের হয়ে কাছের  faxiload এর দোকানে মোবাইল কথা বলা যাবে কিনা বলতেই কেমন অবাক হয়ে তাকাল। আসলে এই যুগে মোবাইল নেই এমন মানুষ নেই। তাই তার অবাক ভাব কাটানোর জন্যে বললাম, ভাই আমার সেটের চার্জ শেষ। বুঝলাম কথাটা কাজ করেছে। নম্বর তুলে কল দিতেই অন্য পাশ থেকে যন্ত্র মানবের মত প্রশ্ন কর, আপনি কি দরকারে কল দিয়েছেন?

যা আমার প্রয়োজন।

Code please...

বাজ

Thanks for your confirmation, Arnob. Let's meet at the Bathroom of Castol Gas Station which is nearest to your location at 10:45am. Bye

ওহ, কথার কাজ শেষ হওয়াতে বাচলাম। এমনি কি যন্ত্র মানব বলি। কথা বলার টাকাটা মিটিয়ে দিয়ে দেখলাম ঘড়িতে বাজে ১০:৩০। এই গ্যাস পাম্পটা আসার দিন ই দেখেছিলাম, স্টান্ডের পাশে। আগেরটা ফেলে নতুন চুইংগাম মুখে দিয়ে হেটেই যেতে থাকলাম পাম্পের লক্ষে। সাধারণত পাম্প গুলার টয়লেট সুন্দর করে। কারণ এতে ডাইভার রা তাদের কর্ম সারতে উৎসাহিত হয় আর পাম্পের ব্যবসা ভাল হয়। এটা তার ব্যাতিক্রম না। তাছারা পুরা দিনের পুরা প্রস্তুতি নিতে আমার ও কিছু কর্ম বাকি আছে। টয়লেট এ গিয়ে লাইন ধরতে হল না এটাই বাচলাম। কাজ শেষ করতে একটু বেশি সময় নিলাম ১০:৪৫ বাজানো জন্য। বের হয়েই দেখলাম একজন ১১-১২ বছরের বাচ্চা ছেলে শিষ দিতে দিতে মুখ ধুচ্ছে। শিষটা খুব চেনা। পাশের ট্যাপে গিয়ে মুখ ধুতে ধুতে বললাম ১০:৪৫ বাজে না?

ছেলেটি আমাকে পাশের ডাস্টবিনটা দেখিয়েই বের হয়ে গেল। কাছে গিয়ে দেখলাম আবার আর একটা প্যাকেট তবে বড় আর মোটা। প্যাকেটটা খুলে কিছু টাকা ওয়ালেট এ রেখে বাকি টাকা প্যাকেট এ ভরে বের হলাম।

এখন একটি সাইবার ক্যাফে খুজবো না কি ল্যাপটপ কিনবো, চিন্তার বিষয়। ল্যাপটপ কিনলে আবার নদীতে আগের মত ফেলে দেওয়া লাগবে আর সাইবার ক্যাফে গেলে আগের মত নাটক করতে হবে। ঠিক করলাম যা আগে পাব তাই করব। একটা অটোরিক্সা করে সদরের দিকে রওনা দিলাম। যদিও রাজধানি যেতে বেশি সময় লাগে না এখান থেকে, কারন এটা এই জেলার শেষ প্রান্ত আর ঢাকা জেলা শুরু। তবুও সদরে যাওয়ার কয়েকটা কারনের মধ্যে একটা কারন এখানে ভীর কম।

অটোরিক্সা থেকে নেমে শহরের মধ্য দিয়ে হাটা শুরু করলাম। কারন শহরের মধ্য দিয়ে হাটার এক প্রকার আনন্দ আছে যা সেই ছোট বেলায় অনুভব করা। হাটতে হাটতে প্রথমে সাইবার ক্যাফে পেলাম। তাই চিন্তা মত নাটক করতে হবে। উহ্!

ক্যাফেতে এই সকাল বেলা ভির কম। টাইম সাইন করে বসে পরলাম একটা কম্পিউটার এর সামনে। S.pen drive টা বের করলাম চারপাশ দেখে USB তে লাগিয়ে দিলাম। জানি Support করবে না। কারন এটা যে এটাই, আমার আংগুলের ছোয়া যতক্ষন লেগে থাকবে শুধু ততক্ষনই কাজ করবে। Drive গুলো দেখে NET বন্ধ করে headphone টা কানে লাগালাম। S.pen তে ছুতেই যেন সম্পূর্ন কম্পিউটার দখল করে নিল। সেই যন্ত্র মানব কন্ঠে আবার বক্তব্য!

কেমন আছ অর্নব? আচ্ছা, সরাসরি কাজের কথায় আসি, কারন তুমি এ কন্ঠ পছন্দ কর না। কাজটা একটু আলাদা, আগেই শেষ করে দেওয়া যাবে না। কারন তা হলে তোমার দরকার হতো না। হাসপাতালের ম্যাপ টা যা দেখচ্ছ এটাতেই তোমার Full mission. তুমিতো কোন contact system ই use করনা যে পরে সব বলে দেব। তাই কষ্ট করে time মতে কাজ করতে হবে। যে video টা নিচে দেখছ ওই যায়গায় আজ রাত 6pm to 6:15pm পর্যন্ত একটা Red colour Car থাকবে। ওটার ডিকি টা খোলা থাকবে। ওখানে তোমার প্রয়োজনীয় জিনিস থাকবে। আর একটা কথা, ডাক্টার সাধারনত আজ 9pm to 12am হাসপাতালে থাকবেন। Good Bye with Good Luck. Win of WIN.



ওহ্, বাচলাম আর একবার। অতএব এখন ১১:২৬ থেকে ৬টা পর্যন্ত আমি মুক্ত। এখন কম্পিউটার এর পালা। আগের মত WINDOWS ক্রাস করার জন্য C Drive এ গিয়ে কিছু delete আর rewrite করলাম। ক্রাস না করলে কিছু তথ্য থেকেই যেত। কাজ শেষ। ক্যাফেতে থাকা লোকটাকে ডাক দিলাম।

ভাই, কম্পুটার তো কাম করে না!

লোকটি এসে বলল, এটা কি করেছেন। ক্রাস করে ফেলেছেন যে। চালাতে পারেন না?

ওহ্, ভাই আমিতো বুঝবার পারি নাই। সোরি ভাই!

এই বলেই বের হয়ে আসলাম, আর যাই হোক আমি নাটকে কাচা!

এখন S.pen Drive টাকে ড্রেন এ ফেলে রওনা দিতে হবে আমার আলাদা জীবনের দিকে। কারন কাজ শুরু করার সময় অনেক আছে। এর মধ্যে মনটা ও পরিস্কার করা যাবে ওখানে গিয়ে, অনেক দিন ধরেই যাওয়া হয়না শুধু টাকা দিয়ে আসা ছারা। তাছারা ওটা কাজের থেকে ১ঘন্টার পথ। আর কিছু টাকাও দিয়ে আসা যাবে।

একটা রিকশা নিয়ে সোজা চলে গেলাম বাসস্টান্ডে। টিকিট কেটে বসে পড়লাম বাসের C1 সিটে। কিন্তু বয়স্ক চাচার সিট C3 হওয়ায় তার জন্য সিট ছেরে দিয়ে তার সিটে বসতে হল, টিকিট পাল্টিয়ে। তার নাকি শ্বাস কষ্ট, জানালার পাসে না বসলে কষ্ট হয়।

বাস ছারতেই আর একটা চুইংগাম মুখে ঢুকিয়ে চাবাতে চাবাতে ভাবতে লাগলাম যে পরবর্তী পরিকল্পনা কি করা যায়। এমন সময় হুট করে বাস থামলো মাঝ রাস্তায়। অবস্তা বেগতিক বুঝে মাথা উচু করে সামনে তাকাতে একজন 6.5mm ধারী লোক দেখতে পেলাম। লোকটা আমার চেনা। যদিও আমাকে চেনে না। ভাল ভারাটে  one shooter। বুঝলাম আমাকে মারার জন্যই পাঠানো হয়েছে। জীবনের সময় বুঝি শেষই হলো অবশেষে। টাকা গুলো দিয়ে আসতে পারলে ভালো লাগতো। কিন্তু এই সব খুনিদের মানুষ মারা যেন নেশা। টাকা পাবে লক্ষ্য জানবে, গুলি করবে। শেষ! এর আগে পরে কিছুই দেখবে না। গুলি ও একটার বেশি খরচ করবে না। আর ওর হাতের গুলিটা সামনের ফাকা সিটটাও ভেদ করে আমাকে লাগাতে সক্ষম। আর বেশি লাফা লাফি করতে নিলে অন্য কারও লাগতে পারে। তাই চোখ বড় বড় করে খুলে বসে রইলাম। এটা আমার জীবনের একটা শখ। নিজের মরার গুলিটাকে আসা নিজে অনুভব করবো ধীরগতিতে English-এ যাকে বলে SlowMotion.....

(চলবে...)

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ